নিজস্ব প্রতিনিধি-মোঃ আমির হোসেন ভূইয়া।
মুরাদনগর (কুমিল্লা):
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে কুখ্যাত মাদক সম্রাজ্ঞী রুবি আক্তার (৪৫) এবং তার ছেলে ও মেয়ে-কে গণপিটুনিতে হত্যা করেছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। বুধবার রাতে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রুবি ও তার পরিবার এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও বিভিন্ন মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। মাদক বিক্রির পাশাপাশি তারা এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি, মহল্লার তরুণদের দিয়ে মাদক বিক্রি করানো এবং প্রতিবাদকারীদের মারধরের অভিযোগে পরিচিত ছিল। একাধিকবার স্থানীয়রা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা হয়নি। সম্প্রতি এলাকার কয়েকজন কিশোর মাদকাসক্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়।
বুধবার রাতে এলাকায় মাদক বিক্রির সময় রুবি ও তার ছেলে-মেয়ের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা তাদের ঘর থেকে টেনে বের করে পিটুনি শুরু করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকেই মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান (ওসি) জানান, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসনের দীর্ঘদিনের উদাসীনতায় রুবির মাদক সাম্রাজ্য বিস্তার পেয়েছিল। তারা মাদকমুক্ত এলাকা গড়তে চাইলে রুবির পরিবারের হুমকির মুখে পড়তেন। স্থানীয়ভাবে দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি অনেকের।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের পর কড়ইবাড়ি এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনেকে একে জনরোষের ফলাফল বললেও, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অপরাধ, এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।