মীর দুলাল বিশেষ প্রতিবেদন!
সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সারা দেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ইস্যুতে গড়ে ওঠা এই প্ল্যাটফর্ম।
একই সঙ্গে জাতীয় সরকার গঠনের দাবিও জানিয়েছে।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার বিকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ জনতা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমবেত হন। এতে শহিদ মিনার চত্বর জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
এখানেই একদফাসহ অসহযোগের কর্মসূচি ঘোষণা হলে উত্তাল জনসমুদ্রের ঢেউ ওঠে। দেশের সব নাগরিককে অসহযোগ কর্মসূচি সফল করার আহ্বানও জানান বক্তারা। উপস্থিত শিক্ষার্থী-জনতা করতালি দিয়ে এ কর্মসূচিকে স্বাগত জানান।
এদিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তাতে সাড়া দেননি সমন্বয়করা।
বিকাল ৫টার দিকে শহিদ মিনারে সমাবেশ শুরু হয়।
এখানে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা একদফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।
একদফা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ।’ তিনি বলেন, ‘শুধু শেখ হাসিনা নয়, মন্ত্রিসভাসহ পুরো সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিলোপ করতে হবে।
আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে চাই, যেখানে আর কখনো কোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে।’
এই সমাবেশে ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, খুনি সরকারকে টেনে নামাতে সারা দেশের মানুষকে অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচিগুলো পালনের আহ্বান জানাবেন এবং এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেবেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন।
একপর্যায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা হয়। কয়েকদিনের হামলায় দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়। এরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সারা দেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
দেশের ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদে ও ৯ দফা দাবিতে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এদিন রাজধানীর মিরপুর-১০, সায়েন্সল্যাব, রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল, যাত্রাবাড়ী-শনির আখড়া, উত্তরা, খিলগাঁওসহ অনেক এলাকায় শান্তিপূর্ণ মিছিল, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন হয় মহাখালী ও মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায়ও। এসব বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়াদের মাথায় লাল কাপড় ও জাতীয় পতাকা দেখা গেছে।