সংবাদদাতা: দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের ৫৫ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫৫-৬০ জনকে আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ১১ই জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসায় হামলার সময় হাফেজ মাসুদ আহমাদ নিহতের ঘটনায় তার খালাতো ভাই নবীনগর উপজেলাস্থ বগডহর গ্রামের বাসিন্দা ও নবীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মেহেদী হাসান বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
নিহত হাফেজ মাসুদ আহমাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইউনুসিয়া মাদারাসার মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ঐসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাদরাসার নবনির্মিত ৬তলা ভবনের উপরে চলে গেলেও সেখান থেকে তাঁকে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। তিনি নবীনগর উপজেলার সেমন্তঘর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। উক্ত মামলায় জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোঃ মহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তানজিল বারী, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভুইয়া, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারন সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক ভূইয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান লেলিন, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সাবেক গনপূর্ত মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি আবু মুছা আনছারি, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মালেক চৌধুরী, শহর যুবলীগের সভাপতি আল-আমীন সওদাগর, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিন মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হক, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য খোকন আচার্য, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সামি আহমেদ নাবিল, সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন খন্দকার, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের উপ-সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সাবেক ভিপি হাসান সারোয়ার হাসান, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, শহর আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আবদুল জব্বার মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জুম্মান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মোঃ আলী আজম, ঠিকাদার হামদু মিয়া, শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরে মাওলা ফারানিসহ আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ৫৫ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া উক্ত মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫৫-৬০ জনকে আসামী করা হয়। মামলার বাদি মাওলানা মেহেদী হাসান অভিযোগ করে বলেন, ২০১৬ সালের ১১ই জানুয়ারি সন্ধ্যায় উল্লেখিত আসামীরা অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসায় হামলা করে। এসময় হামলাকারীদের ছোড়া গুলি মাসুদের পেটে বিদ্ধ হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। মাসুদের পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় থাকায় এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা হাফেজ মাসুদ হত্যার আসামীদের ফাঁসী চাই। এনিয়ে আমরা মানববন্ধন সহ আরও কিছু কর্মসূচি পালন করবো ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য গত ২৩ই আগস্ট রোজ শুক্রবার ২০২১ সালের ২৭ই মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার টিএ রোডে মোদী বিরোধী আন্দোলনে সংঘর্ষের সময় জামিয়া ইউনুসিয়ার আরেক ছাত্র মাওলানা হুসাইন আহমাদ হত্যার ঘটনায় তার বড় বোন তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এতে মোক্তাদির সহ আরও ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনশো লোককে আসামী করা হয়।