সংবাদদাতা: দেলোয়ার হোসাইন মাহদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে টানা তিনদিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৪ মে) বিকেলে এ সংঘর্ষে নিয়াজুল মিয়া (৪৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। নিহত নিয়াজুল চান্দের বাড়ির তোতা মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রমিকদল নেতা তুহিনের চাচা এবং বিএনপি পরিবারের সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নাটাই ইউনিয়নের চান্দের বাড়ি ও ছলিম বাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর সূত্রপাত ঘটে সোমবার (১২ মে) রাতে, যখন ছলিম গোষ্ঠীর শহিদ মিয়ার ছেলে ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন যুবক চান্দের বাড়িতে বসে ইয়াবা সেবন করছিল বলে অভিযোগ উঠে। এসময় বাধা দিলে উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরদিন মঙ্গলবার সকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ১০-১২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও অন্তত ১০ জন আহত হন। বুধবার বিকেলে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। সংঘর্ষে টেটা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয় এবং প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ১০-১২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে, যা পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত নিয়াজুল মিয়াকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এছাড়া বিএনপি নেতা তকদির মেম্বারের ছেলে হেলাল গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন বলেন, “দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীগত বিরোধের জের ধরেই এই সংঘর্ষ হয়েছে। দোষীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এদিকে এই ঘটনায় বিএনপির আগামীকালের আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।