1. live@khaborerkantho.com : খবরের কণ্ঠ : খবরের কণ্ঠ
  2. info@www.khaborerkantho.com : খবরের কণ্ঠ :
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০৭ অপরাহ্ন

সিলেটের উত্তরাঞ্চলে পাঁচ বছর ধরে কোয়ারি বন্ধ বাড়ছে বেকারত্ব। 

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

 

এ কে আজাদ সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি:||

সিলেট সীমান্তবর্তী উত্তর অঞ্চল গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুরে পাথরকোয়ারি বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ৫ বছর আগে। তখন থেকে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার। ব্যবসায়ীরাও লোকসানে। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় এ অঞ্চলে বাড়ছে অপরাধ, মাদকাসক্তি আর সামাজিক অস্থিরতা। স্থানীয়দের দাবি—সরকার এখনই ব্যবস্থা নিকজোনাস , নয়তো সীমিত আকারে সনাতন পদ্ধতিতে কোয়ারি খুলে দিক।

সিলেটের উত্তরাঞ্চলের তিন উপজেলার মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল পাথরকোয়ারি। শ্রমিকরা দিন মজুরি পেতেন, ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু পাঁচ বছর আগে পরিবেশগত কারণে কোয়ারি বন্ধ হয়। এর পর থেকে শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েন , ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মধ্যে আছেন এখন।

গোয়াইনঘাটের একজন শ্রমিক বলেন,আমাদের রক্ত-ঘামে এই এলাকার উন্নয়ন হয়েছে। এখন কাজ নেই, পরিবার নিয়ে অনাহারে থাকতে হচ্ছে দেখার মত কেউ নাই অথচ সরকার পরিবেশের দোয়াই দিয়ে ৫ বছর থেকে কোয়ারি বন্ধ রেখেছে আমাদের বিকল্প কোন কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করে দেয় নাই, অথচ সরকার চাইলে জাফলং , বিছনাকান্দি , ও কোম্পানীগঞ্জ সাদাপাথ জিরো পয়েন্টে, নির্দিষ্ট জায়গা পর্যটকদের জন্য নির্ধারিত রেখে, বাকি এলাকা গুলোতে ইজারা দিয়ে, শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারতো, তাতে সরকারও রাজস্ব পাইতো, আমাদের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা হয়তো, আর কত আমরা পারতেছি না,আমাদের দ্রুত একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক এটা সরকারের কাছে আমাদের দাবি।

কোম্পানীগঞ্জের এক ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন, আমরা ট্রাক, ডাম্পার, মেশিন কিনেছি কাঁসার মিল আছে । এখন সব অকেজো হয়ে পড়ে আছে মরিচা ধরতেছে গাড়ির কিস্তি দিতে পারতেছি না অন্যদিকে ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে পারছি না। কিন্তু পরিবেশের দোহাই দিয়ে পাঁচটি বছর হয়ে গেল মানুষের কর্মসংস্থা বন্ধ করে রাখা হয়েছে, আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে রাখা হয়েছে আজ কোটি কোটি টাকা লুসকান আমাদের কিন্তু বিকল্প কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় নাই।আমাদের এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার তাদের কষ্ট বুঝার কেউ নাই, তাই দূরত্ব উচিত শ্রমজীবী মানুষের জন্য দ্রুত কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করে দেওয়া।

স্থানীয়দের মতে, সরকার চাইলে এটার দ্রুত সমাধান সম্ভব। প্রতিটি জিরো পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য একটি নির্দিষ্ট অংশ রেখে বাকি এলাকাগুলো শ্রমিকদের জন্য ইজারা দিলে সবাই উপকৃত হবেন। তাতে সরকারও রাজস্ব পাবে,সাধারণ শ্রমিকদেরও কাজের ব্যবস্থা হবে।
তাদের দাবি, সরকারের উচিত এই এলাকার মানুষের জন্য দ্রুত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। না হলে অন্তত নিয়ন্ত্রিতভাবে সনাতন পদ্ধতিতে কোয়ারি খুলে দেওয়া উচিত।

বেকারত্বের কারণে এলাকায় বাড়ছে অপরাধ। যুবকেরা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মারামারি আহাজারি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই মাদকাসক্ত হচ্ছে। অভিভাবকেরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে নতুন প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।

গোয়াইনঘাটের এক প্রবীণ মুরুব্বী মোঃ গোলাম হোসেন বলেন,কাজ না থাকায় ছেলে-মেয়েরা অবৈধ পথে যাচ্ছে। এখনই সমাধান না হলে এলাকা অপরাধের আখড়ায় পরিণত হবে। তাই সরকার বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

জৈন্তাপুরের এক শ্রমিক বলেন আগে পাথর কোয়ারীতে কাজ করতাম আমার পরিবার নিয়ে শান্তিতে ছিলাম, কিন্তু পাথর কোয়ারি বন্ধ হওয়ার পর থেকে কোন কাজ নেই, মাঝে মাঝে রাজমিস্ত্রির সাথে যুগালী কাজে যাইতাম কিন্তু অনেকদিন হয়ে গেছে এখন এই কাজ নেই আমার দুটি মেয়ে তাদের লেখাপড়া করাতে পারছি না, তারা এখন অনেক বড় হচ্ছে লেখা পড়ার দরকার পরিবারের খরচই চালাতে পারি না তাদের লেখাপড়া করাবো কিভাবে,আমাদের এই কষ্ট বোঝার মত কি কেউ নেই।

স্থানীয়রা ইতোমধ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, দ্রুত শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। নয়তো সীমিত আকারে কোয়ারি পুনরায় চালু করে শ্রমিকদের কাজে ফিরতে দেওয়া উচিত। ডিসি কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়দের আশা, দ্রুত পদক্ষেপ নিলে শ্রমিক ও যুবসমাজকে নিরাপদ ও জীবিকার সুযোগ প্রদান সম্ভব হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট