মিজানুর রহমান মিলন
বিশেষ প্রতিনিধি।।
লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলাধীন দইখাওয়ায় ১৫ বিজিবি’র উদ্যোগে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা বন্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১০ আগস্ট) সনাতনসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের পাশে দাঁড়াতে ১৫ বিজিবি’র অধিনায়ক উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৯ আগস্ট ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১১.০০ ঘটিকায় লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার উত্তর গোতামারির শ্মশানঘাট নামক স্থানে সীমান্ত পিলার ৯০১/৪ এস’র নিকট হঠাৎ করে মাঝ বয়সি ৫০/৬০জন সনাতন ধর্মাবলম্বীর ছেলে জড়ো হয়। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে দই খাওয়া বিওপি’র কোম্পানি কমান্ডার তৎক্ষণাৎ ০২টি টহল টিম নিয়ে ঘটনাস্হলে গমন করে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় তাদেরকে বুঝিয়ে সীমান্ত এলাকার লাইন হতে বাংলাদেশের ভেতরে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। ক্রমান্বয়ে লালমনিহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা এবং পার্শ্ববর্তী অন্যান্য উপজেলা ও জেলা সমূহ হতে সনাতন ধর্মাবলম্বীর বিভিন্ন বয়সের লোক উত্তর গোতামারির শ্মশান ঘাট এলাকায় সমাগত হতে থাকে। যার প্রেক্ষিতে উক্ত এলাকায় স্বল্প সময়ের মধ্যে ৫০০-৬০০জন সনাতন ধর্মাবলম্বী জড়ো হয়। এদের মধ্যে কেউ শ্মশান ঘাট এলাকায় অবস্থিত রাস্তার উপর অবস্থান করে এবং আনুমানিক ২০০-২৫০জন সীমান্তের শুন্য লাইন বরাবর অবস্থিত খর্প নদীর পাড়ে পানির মধ্যে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য তৎক্ষণাৎ পার্শ্ববর্তী বিওপি এবং ব্যাটালিয়ন সদর হতে জনবল বৃদ্ধি করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং হাতীবান্ধা উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতিকে সাথে নিয়ে যেন শুন্য লাইন অতিক্রম না করে সেজন্য তাদের বোঝানো হয়।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ, (পিএসসি) বিষয়টির অবগত হওয়ার পর সাথে সাথে ৭৮ বিএসএফ কমান্ড্যান্টকে অবগত করেন। তাছাড়া ঘটনাস্থলে পৌঁছে শূন্য লাইনের কাছে জড়ো হওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বের সাথে কথা বলে তাদের অভিযোগ/সমস্যার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন এবং সকল সমস্যার সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। তাছাড়া ৭৮বিএসএস কমান্ড্যান্টকে এর সাথে কথা বলে জড়ো হওয়া লোকদের নিজ বাড়িতে ফেরত যেতে বলতে অনুরোধ করেন। এদিকে এলাকার সাধারণ উৎসব জনগণ পরিস্থিতি অবলকোনের জন্য জমায়েত হওয়ার পুরো এলাকার আনুমানিক ৩০০০-৩৫০০ লোক সমাগত হয়।
অতপর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার লালমনিরহাট এবং ইউএনও হাতীবান্ধা, স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন স্থানীয় সমন্বয়ককে এবং হাতীবান্ধা উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতিসহ সবাইকে নিয়ে পুনরায় তাদের নিরাপত্তা প্রদানসহ সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করা হলে ধীরে ধীরে তারা স্থান ত্যাগ করে, নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। সমাগত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কয়েকজনের কাছ থেকে জানা যায়, যে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং কারো কারো ঘর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, বিগত সরকারের পতনের পর লালমনিরহাট জেলায় বসবাসরত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জান ও মালের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বসবাসরত এলাকা সমূহের সার্বক্ষণিক নজর রাখছে।
অধিনায়ক আরো বলেন- সনাতন ধর্মাবলম্বরা বাংলাদেশের নাগরিক। তারা আমাদের ভাই বোন। তাদের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ যেকোন সমস্যার সমাধানে জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।
তিনি আরো বলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন কে নিরাপত্তা দিতে আমরা সদা সর্বদা প্রস্তত আছি, তিনি আরো বলেন এই দেশে আমরা হিন্দু,মুসলিম সবাই ভাই ভাই আমরা সবাই একত্রে বসবাস করতে চাই, এসময় উপস্থিত ছিলেন গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোনাবেরুল হক মোনা,শ্রী কালী শংকর বর্মন,সহ-সভাপতি হিন্দু বৌদ্ধ খিষ্টান ঐক্য পরিষদ, গোতামারী ইউনিয়ন, শ্রী অশনি কুমার বসুনিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান ৮ নং নওদাবাস ইউনিয়ন পরিষদ ও লালমনিরহাট জেলার কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা।