এ কে আজাদ || সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি: দৈনিক খবরের কন্ঠ পত্রিকা||
১৯৭১ সালে দীর্ঘ সাড়ে নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাক হানাদার ও তাদের দোসরদের তাড়িয়ে একটি মানচিত্র ও নতুন সূর্য ছিনিয়ে আনার দিন ১৬ ডিসেম্বর। বিজয়ের সেই মাহেন্দ্রক্ষণে দেশমাতৃকার তরে প্রাণ বিলিয়ে দেওয়া শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার ভোর থেকে শহীদ মিনারে ঢল মেনেছে সিলেটবাসীর।
কুয়াশার শুভ্র সকালে গাছে পাখির কলতান। লাল সূর্যের আলোয় ধরণী যতই আলোকিত হচ্ছিলো, ততই কাটছে কুয়াশার প্রভাব।
রাস্তায় ততই বাড়ছে মানুষের সমাগম। ফুল হাতে, গায়ে জড়িয়ে লাল-সবুজের আচ্ছাদন। সুরের মুর্ছনা আর কোলাহলে মুখরিত শহীদ মিনার। নতুন বাংলাদেশ গড়ার আশায় বুক বেঁধে শহীদ মিনারে শিশু, ছেলে বুড়ো থেকে সব বয়সী মানুষ।
সোমবার সকাল ৬টা ৪০মিনিট থেকে বিজয় দিবসে শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন শুরুর মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন শুরু হয়।
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নামে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। সিলেট নগরীর সব ক’টি সড়কে আগত মানুষের গন্তব্য ছিলো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বেদিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে প্রথমে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটি, তারপর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। পর্যায়ক্রমে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, উপ মহা পরিদর্শক (ডিআইজি), মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা ও মহানগর বিএনপি, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীসহ সংগঠন একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এছাড়া সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে শহীদ মিনারের বেদি।
এদিকে মহান বিজয় দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিলো শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। শহীদ মিনার এলাকা ছাড়াও নগরময় পোশাকে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিলো। এছাড়া বিজয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন।