
এ কে আজাদ সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি:।
সিলেটের গোয়াইনঘাটে উপজেলা প্রকৌশলী হাসিব আহমদের সদ্য কেনা প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মোটরসাইকেল রয়েল এনফিল্ড ও তা পার্কিং বিতর্ক স্থানীয় মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সচেতন মহলে তার আচরণ, নিয়ম উপেক্ষা এবং দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে স্পষ্টভাবে লেখা— ‘এখানে যানবাহন পার্কিং করা নিষেধ’। তবে অভিযোগ রয়েছে, হাসিব আহমদ নিয়ম উপেক্ষা করে প্রশাসনিক ভবনের ভেতরই বাইক পার্ক করেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন-সরকারি কর্মকর্তারা কি আইনের ঊর্ধ্বে?
প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি চাকরির বেতনে কীভাবে এমন উচ্চমূল্যের মোটরসাইকেল কেনা সম্ভব। বিষয়টি জানতে চাইলে হাসিব বলেন, আমি পিয়নের চাকরি করি না। ৩০ বছর চাকরি করেছি।আমার পারিবারিক সম্পদ ও ব্যবসা রয়েছে। পার্কিং নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, বিষয়টি মাইনর ইস্যু এবং ইউএনও তাকে সাইনবোর্ড অপসারণের কথাও বলেছেন।
স্থানীয় জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে একাধিক সড়ক প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ ও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলো হলো..
গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কের টেন্ডার অনিয়মের কারণে বাতিল! হাদারপার-দমদমা সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার। রহস্যজনক কারণে গোয়াইনঘাট- সোনারহাট সড়কের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ হস বিভিন্ন সড়ক ও ব্রিজের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করতেছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগের স্থানীয় এক নেতার সঙ্গে প্রকৌশলীর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং তারা অংশীদারিত্বে এসব কাজ পরিচালনা করছেন। ঠিকাদাররা জানিয়েছেন, নির্ধারিত কমিশন না দিলে বিল আটকে রাখা হয়, কিন্তু গোপন সমঝোতার মাধ্যমে নিম্নমানের কাজও নির্বিঘ্নে পাস হয়ে যায়।
ফতেপুর ইউনিয়নে চলাচলের উপযোগী একটি সেতু ভেঙে বড় আকারের নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ স্থানীয়দের সমালোচনার মুখে পড়েছে। তারা দাবি করেন, ইউনিয়নে বহু ছোট বেইলি ব্রিজ জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকলেও একটি টেকসই সেতু ভেঙে নতুন প্রকল্প নেওয়া অযৌক্তিক।
অভিযোগ রয়েছে, নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা বিতর্ক ও অনিয়ম গোপন করতে কয়েকজন স্থানীয় সংবাদকর্মীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে। তবে প্রকৌশলী হাসিব এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ছাড় নেই। অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভবনের ভেতরে পার্কিংয়ের প্রবণতা এখন আর নেই।