1. live@khaborerkantho.com : খবরের কণ্ঠ : খবরের কণ্ঠ
  2. info@www.khaborerkantho.com : খবরের কণ্ঠ :
শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

ফটিকছড়িতে রাজনৈতিক শোডাউনে সরকারী অ্যাম্বুলেন্স চালক শোকজ!

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

 

চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বিএনপির জুলাই গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তির শোডাউনে সরকারী অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের ঘটনায় চালককে শোকজ করেছে ফটিকছড়ি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

গতকাল(৬ আগস্ট) বুধবার কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। পরে সেই অ্যাম্বুলেন্সের চালক তৌহিদুল আলমকে শোকজ করে ফটিকছড়ি পৌরপ্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখেছি। অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়ায় চালানোর সুযোগ থাকলেও কোনো রাজনৈতিক নেতা-কর্মী দলীয় পতাকা হাতে এটি ব্যবহারের সুযোগ নেই। এটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হলে আমরা ইতিমধ্যে চালককে শোকজ করেছি।”

এর আগে, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরওয়ার আলমগীর ‘জুলাই-আগস্ট বিজয় শোডাউনে’ সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, অ্যাম্বুলেন্সটি সাইরেন বাজিয়ে পুরো সদর এলাকায় ঘুরে, অথচ তাতে কোনো রোগী ছিল না। বরং সেটি ব্যবহৃত হয় রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হিসেবে শোডাউনে। এতে বিস্মিত স্থানীয় বাসিন্দারা একে ‘সরকারি সম্পদের নগ্ন অপব্যবহার’ বলে মন্তব্য করেছেন।

ফটিকছড়ি পৌর কার্যালয়ের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক জানান, ‘সরকারি অ্যাম্বুলেন্স শুধুমাত্র রোগী পরিবহনের জন্য অনুমোদিত। অন্য কোনো কাজে ভাড়া দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি দাবী করেন, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সটি পৌরসভাকে দান করেছিলেন। এটি রেজুলেশনে স্পষ্ট উল্লেখ ছিলো কোন ভাবেই এটি ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা যাবে না।’

পৌর সুত্রে জানা যায়, গত দুই বছর পূর্বে ফটিকছড়ি সরকারী করোনেশন মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের উপহার হিসেবে ক্রয়কৃত অ্যাম্বুলেন্সটি ফটিকছড়ি পৌরসভাকে হস্তান্তর করে। পরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ রেজুলেশন আকারে দানকৃত অ্যাম্বুলেন্সটি গ্রহণ করে। সেই অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনার জন্য পৌরসভার মাস্টাররোল অনুযায়ী ১২ হাজার টাকা বেতনে একজন চালক নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। অ্যাম্বুলেন্সটি পৌরসভায় হস্তান্তর করার পর থেকে গাড়িটি চালাচ্ছেন বলে দাবী করেন চালক তৌহিদুল আলম।

জানা যায়, সংবাদ প্রকাশের পর গতকাল (৬ আগস্ট) বুধবার বিকেল ৪ টার দিকে তড়িঘড়ি করে বিএনপির পক্ষ থেকে পৌরসভাকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া বাবদ ৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেন বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তবে ভাড়া বাবদ বিএনপিকে কোনো রশিদ দেয়া হয়নি বলে জানান পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি বড়ুয়া।

এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে সেদিন অ্যাম্বুলেন্সে চিকিৎসক টিম ছিল বলে দাবি করা হলেও এই প্রতিবেদক বিবিরহাট বাসস্টেশনে শোডাউনে অ্যাম্বুলেন্সের সামনের আসনে উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও ফটিকছড়ি পৌর বিএনপির সদস্য মুনসুর আলম চৌধুরী, পিছনের সিটে ফটিকছড়ি পৌর বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম বাসেক ও বিএনপির সমর্থক জাফর চৌধুরীকে দেখতে পায়। সেই অ্যাম্বুলেন্সে বিএনপির এ তিন নেতা ছিলেন বলে সতত্যা নিশ্চিত করেন চালক তৌহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘রোগী পরিবহনের কথা বলে অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া নেয় বি,ুন,পি নেতা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পরে দেখি অ্যাম্বুলেন্সটি কোনো রোগী নয়, বিএনপির শোডাউনে ব্যবহারের জন্য নেয়া হয়েছে। সেদিন অ্যাম্বুলেন্সটি প্রথমে ফটিকছড়ি পৌরসভা থেকে বাগানবাজার ইউনিয়ন। পরে বাগানবাজার থেকে জাফতনগরে মোহাম্মদ তকিরহাট ঘুরে বিকেলে পৌরসভায় ফেরত আসে বলে জানান অ্যাম্বুলেন্স চালক। তিনি আরও বলেন, যারা ভাড়া নিয়েছেন তারা গতকাল(বুধবার) বিকেল ৪ টার দিকে আমাকে গাড়িভাড়া বাবদ ৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।’

পৌরসভার উপ- সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি বড়ুয়া বলেন, “অ্যাম্বুলেন্সের চালক রোগী পরিবহনের কাজে যাচ্ছেন সেটি আমাকে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি গাড়িটি নিয়ে রাজনৈতিক শোডাউনে যাচ্ছেন তা জানাননি।”

ফটিকছড়ি পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিপ্লব চন্দ্র মুহুরী বলেন, “এ ঘটনায় ফটিকছড়ি পৌর প্রশাসক ও ইউএনও মহোদয় অ্যাম্বুলেন্স চালককে শোকজ করতে বলেছেন। তিনি ৩ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট