এ কে আজাদ: স্টাফ রিপোর্টার ||
সবাই চেয়ে চেয়ে দেখল, একটা মানুষকে কীভাবে মারতেছে! কেউ একটু সাহায্য করে নাই। এভাবে একটা মানুষ কি আরেকটা মানুষকে মারতে পারে! আমার তো সারাজীবন চোখের জল ফেলতে হবে। সন্তানদের নিয়ে সারাটা জীবন কীভাবে পার করব? শুরুতেই শেষ করে দিল।’
শনিবার (১২ জুলাই) বরগুনায় নিহত সোহাগের বাড়িতে গেলে এসব কথা বলেন নিহত তার স্ত্রী লাকী বেগম।
লাকী বেগমের অভিযোগ, তার স্বামীকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করার পরও থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ বারবার থানায় ডেকে নিয়ে এজাহারের পরিবর্তন করেছে। এমনকি সোহাগের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়ে যাওয়ার পরে অদৃশ্য কারণে অনেক সময় পরে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লাকী বেগম বলেন, একটুও কাপড় ছিল না তার (সোহাগের) শরীরে, ওরা কি মানুষ! এমনভাবে মানুষকে মানুষ মারতে পারে। যারা আমার স্বামীকে এত কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। ভবিষ্যতে যেন এমন করে কাউকে হত্যা করার আগে অন্তত দশবার ভাবে। একটা মানুষকে মেরে ফেললে একটা পরিবার শেষ হয়ে যায়। সন্তানরা বাবা ছাড়া হয়ে যায়, স্ত্রী স্বামী ছাড়া হয়ে যায়।
নিহত সোহাগের স্ত্রী ও স্বজনদের অভিযোগ, মাহিনসহ এজাহারভুক্ত আসামিরা মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সোহাগ আসামিদের দাবি করা চাঁদা না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে মুঠোফোনে দোকানে ডেকে নিয়ে এসে মারধর করে ও চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে তাকে প্রকাশ্যে রাস্তার ওপরে পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বরগুনা সদর রোডে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা প্রেস ক্লাব ও মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) বরগুনা জেলা শাখার সদস্যরা, ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার নেতারাসহ সাধারণ মানুষ মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে বক্তারা সোহাগ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মোল্লা দৈনিক খবরে কণ্ঠ কে বলেন, ঘটনার রহস্য পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তাতে অপরাধী যেই হোক, যে দলেরই হোক আমরা এলাকাবাসী তাদের ফাঁসির দাবি করছি। এমন বিচার হোক যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।